
স্থান: ডেনিজলি, তুরস্ক
তারিখ: ২৩ জুন, ২০২৫
তুরস্কে হিজাব পরায় মুসলিম নারী হেনস্তার শিকার।ডেনিজলির একটি পাবলিক বাসে গত জুন মাসে একজন তুর্কি মুসলিম নারীকে হিজাব পরার জন্য শারীরিক ও মৌখিক হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা জানা গেছে। এই ঘটনাটি তুরস্কের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সেকুলারিজমের মধ্যে চলমান সংঘাতের একটি স্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, একজন কেমালিস্ট (কেমাল আতাতুর্কের সেকুলার মূল্যবোধের সমर्थক) নারী সরাসরি হিজাবধারী নারীকে লক্ষ্য করে “এখান থেকে চলে যান! আপনি কে ভাবছেন? এমন মানুষদের চাই না, তোমাদের দেশে ফিরে যান!” বলে চিৎকার করে। এই হামলাটি সামনে থেকে একজন দুই বছরের শিশুর মা হিসেবে নারীটিকে আক্রমণ করে। তবে মুসলিম নারীটি সাহসীভাবে প্রতিরোধ করেন।
এই ঘটনাটি সামাজিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং এটি তুরস্কের ধর্মীয় সহনশীলতা ও সেকুলার মূল্যবোধের মধ্যে চলমান সংঘাতের একটি নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তুরস্ক একটি সেকুলার রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৩৭ সাল থেকে স্বীকৃত, যেখানে ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে দেশের ৯০% জনসংখ্যা মুসলিম, এবং ৩০-৪০% নারী হিজাব পরেন। ২০১৩ সালে সরকারি প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্তরে এই বিষয়ে সংঘাত চলমান রয়েছে।

এই ঘটনাটি সামাজিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়েছে। অনেকে এই হামলাকে ধর্মীয় সহনশীলতার অভাবের প্রকাশ হিসেবে দেখছেন, যখন অন্যদের মতে, এটি সেকুলার মূল্যবোধ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তুরস্কের বিভিন্ন শহরে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে, যা দেশের সামাজিক সংহতির জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এই ঘটনাটি তুরস্কের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশের প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বর্তমান সরকার ধর্মীয় স্বাধীনতা বাড়ানোর দিকে আগ্রহী, যখন কেমালিস্ট গোষ্ঠী সেকুলার মূল্যবোধ রক্ষার জন্য দৃঢ়। এই দ্বন্দ্ব ডেনিজলির মতো শহরগুলিতে স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে, যেখানে আর্থিক উন্নয়ন ও পর্যটনের পাশাপাশি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংঘাতও চলমান।
এই ঘটনাটি তুরস্কের সামাজিক সংহতি ও ধর্মীয় সহনশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করেছে। দেশের নাগরিকদের মধ্যে সহযোগিতা ও বোঝাপড়ার বৃদ্ধি ছাড়া এই ধরনের সংঘাতের সমাধান সম্ভব নয়। সরকার ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।তুরস্কে হিজাব পরায় মুসলিম নারী হেনস্তার শিকার