
ভারতে মুসলমানদের বাড়িতে আগুন কিন্তু কেন?
ভারতে এক মুসলিম পরিবারের ছেলে হিন্দু পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করায়, গ্রামে পঞ্চায়েত ডেকে ওই মুসলিম পরিবার ও আশেপাশের কিছু মুসলিম পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও শেষে আগুন জ্বালিয়ে দেয়, উগ্র হিন্দু্ত্ববাদীরা। ঘটনাটি ঘটেছে ৬ জুলাই, ভারতের ধানী মাহু, ভিওয়ানি, হরিয়ানায়।
কয়েকদিন আগে ভালোবাসে ওই মুসলিম ছেলেটি এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে। যা পরে যানা জানি হলে গ্রামে বিচার ডাকা হয়। গ্রামের উগ্র হিন্দুত্ববাদী মনমানসিকতার কিছু মানুষ, সিদ্ধান্ত নেই এই মুসলমানদের এই গ্রামে আর রাখবে না। এখানে শুধু হিন্দুরা থাকবে।
তাই তারা কিছু লোকজন এনে মুসলিম পরিবারের ওপর হামলা চালাই। ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অবশেষে ঘরের সমস্ত আসবাবপত্রে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় ও মুসলিম পরিবার।

ঘটনাটি ঘটিয়েছে ভারতের কিছু উগ্র হিন্দুরা, এমন বলছে সুত্র। সাথে আরো খবর বেরিয়ে আসছে, এই মুসলিম পরিবারের তাড়ানোর জন্য নাকি, লোকজন ভাড়া করে আনা হয়েছিল। উল্লেখীত এই মুসলিম পরিবারটি গত ৪০ বছর যাবত এখানে বসবাস করছিলো।
যদি কোনো মুসলিম কোনো হিন্দুর সাথে ভালোবাসা বা বিয়ে করে। তখন তাকে, ভারতে “লাভ জিহাদ ” ট্যাগ দেওয়া হয়। এই “লাভ জিহাদ ” আসলে কি? আসলে যখন কোনো মুসলিম ছেলে ও অথবা মেয়ে কোনো হিন্দু ছেলে অথবা মেয়েকে ভালোবাসে বা বিয়ে করে তখন তাকে “লাভ জিহাদ “বলে।
হিন্দুরা মনে করে, ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য, মুসলিমেরা ইচ্ছে করে, হিন্দু যুবক যুবতিদের প্রেমের ফাদে ফেলে। প্রেমের ফাদে ফেলে ওই হিন্দুকে মুসলিমে রুপান্তর করে। আর এজন্যও হিন্দুরা চাই এটা যেন থামানো যায়। আর তারানে করে এটি থামানো তাদের জন্য পুণ্যের কাজ।
যদি সত্যিতে দেখা যায়, তাহলে তাদের এই মনোভাব কিছুটা সত্যি। যেমন কোনো মুসলিম মেয়েকে অথবা ছেলেকে প্রেমের ফাদে ফেলে যদি কোনো হিন্দু ছেলে মেয়ে বিয়ে করে এবং তাকেও হিন্দুতে রুপান্তর করে, তাহলে তাকে মুসলিমেরা ” ভাগওয়া লাভ ট্রাপ বলে “।

আর ভারতে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে, এমনকি বাংলাদেশেও অনেক হিন্দু সংগঠনের সহায়তায় বাংলাদেশেও এমন কাজ ঘটে চলেছে। কয়দিন আগেও ঠিক এমন একটি ঘটনা হাতে নাতে ধরা পড়েছে বাংলাদেশে।
তাহলে ভাবেন ভারতে কি পরিমাণে ঘটছে। আর এই একই ঘটনা যখন মুসলিমেরা ঘটায় তখন তাকে “লাভ জিহাদ “বলে। কিন্তু সব ঘটনা যে এমন তা কিন্তু নই। সত্যি বলতে মাত্র ২০ শতাংশও এমন ঘটনা ঘটে থাকে আর বাকি ৮০ শতাংশও ট্রু লাভ বা সত্যির ভালোবাসা।
আসলে ভালোবাসা কোনো জাতপাত,ধর্ম বর্ণ মানে না। যখন খুশি যেকারো সাথে ঘটে যেতে পারে। তাই বলে যে তাকে উগ্র ট্যাগ লাগিয়ে দিতে হবে। এমন কিন্তু কথা নই। আর একজন মুসলিম হিসেবে প্রেম করাই হারাম। আর বিধর্মী মেয়ের সাথে বিয়ে করা তো একদমই নিষিদ্ধ।

ইসলাম বলে, একজন মুসরিক নারী যতও সুন্দর ও আকর্ষণীয় হোক না কেন? তার থেকে একজন ইমানদার নারী হোক সে কুৎসিত বা কালো কিন্তু তাকে বিয়ে করা অধিক উত্তম।
কিন্তু ভারতের ঘটনাটি যে “লাভ জিহাদ ” ছিলো তার কোনো প্রমাণ ছিলোনা। কিন্তু উগ্ররা যখনই শুনতে পেয়েছে মুসলিম ছেলে হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করেছে। তখনই তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এমন হলে তো নায়ক শাহরুখ খানকেও আক্রমণ করা উচিত। কারণ তার স্ত্রীও একজন হিন্দু।
স্থানীয় মুসলমানদের কাছে জিজ্ঞেসা করা হলে, তারা ভয়তে কোনো কথা বলতে চাইছে না। কারণ পাশের কয়েকটি বাড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কারণ তারা ও মুসলিম পরিবারের পক্ষে হয়ে কথা বলার কারণে।
ঘটনা স্থানে বর্তমানে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন উপস্থিত আছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা বলেন – আপরাধ যারাই করুক না কেন? তারা অবশ্যও শাস্তি পাবে। ঘটনা স্থলে বর্তমানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
বর্তমানে মুদি সরকারের অধীনে ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন বাড়েই চলেছে। মুসলিম বিশেষজ্ঞদের দাবি এভাবে চলতে থাকলে একসময় ভারত থেকে মুসলমানদের নাম নিশানা মুছে যেতে পারে।
Muslim Observer – মুসলিমের কথা বলে।
আমাদের Online Store – BD MATJAR