
ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে ফিফা
ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে ফিফা ইজরায়েলকে আন্তর্জাতিক ফুটবল ও ফিফা বিশ্বকাপ থেকে বাদ দেবার দাবি তুলেছে অনেক দেশ। ইউরোপের দেশগুলো থেকে ৫৮ আইনজীবী, ইজরায়েল কে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার জন্য ফিফাকে লিগাল নোটিশ দিয়েছেন। তারা গণমাধ্যম কে জানান, গাযায় গণহত্যার প্রতিবাদ স্বরুপ এমন লিগাল নোটিশ দিয়েছেন তারা। তাদের মতে,গণহত্যা কারী কোনো দেশ ফিফার অংশিদার হতে পারে না।
এর আগে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলা করায় ফিফা তাদের আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ও বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার করেছিল। ফিফার স্পষ্ট বার্তা ছিলো ইউক্রেনের ওপর হামলা না থামানো পর্যন্ত রাশিয়া আন্তর্জাতিক ফুটবল ও বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না। ঠিক সেই বিষয় উল্লেখ করে লিগাল নোটিশ দিয়েছেন আইনজীবীরা।
এবার অবশেষে ফিফার একটি সভায় এ বিষয়ে ফিফার চেয়ারম্যান মুখ খুলেছেন। তিনি ফিলিস্তিনের ফুটবল বোর্ডের সভাপতির সাথে, সাক্ষাৎকারের সময় বলেন, আমরা কোনো ভূ-রাজনীতে হস্তক্ষেপ করতে পারিনা। কিন্তু আমরা মানবতার পক্ষে আছি।
মরোক্কোতে জেন-জি আন্দোলনের সর্বশেষইসরায়েলকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে ফিফা

তিনি আরো বলেন,ইজরায়েল ওয়েফার সদস্য, তাই এবিষয়ে প্রথমে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এমন নানা ভাবে ঘুরিয়ে পেছিয়ে জবাব দেন তিনি। তার মতে ফিফা রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
কিন্তু ফিফার সভাপতির এই বার্তা চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে। সমালোচকদের দাবি, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ফিফা রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছিলো। তখন তারা মানবতার ফেরিওয়ালা হয়েছিল। কিন্তু এখন ফিলিস্তিনের বিষয়ে কেন তারা উদাসীন।
এবিষয়ে অনেক বলছেন, ক্রিকেটে যেমন আইসিসির সমস্ত সিদ্ধান্ত ইন্ডিয়া নিয়ে থাকে। ঠিক অনুরূপ ভাবে ফিফার সব সিদ্ধান্ত পশ্চিমারা নিয়ে থাকে। আর পশ্চিমাদের লিডার হলো আমেরিকা। আর আমেরিকা ইজরায়েল চরম বন্ধু। তাই ফিফা অতিরিক্ত চাপে না পড়লে কোনোদিনই ইজরায়েল কে নিষিদ্ধ করবে না।

এদিকে ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল আর্জেন্টিনা প্রকাশ্যে ইজরায়েল দিকে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দাবি ইজরায়েল যা করছে তা তাদের নিরাপত্তার জন্য করছেন। তাই এতে ইজরায়েল কে ফিফা থেকে নিষিদ্ধ করার কোনো কথায় আসে না।
যখন আর্জেন্টিনার মতন হেভিওয়েট ফৃটবল দল ইজরায়েল দিকে থাকে। আমেরিকা ও ইউরোপের খ্রিষ্টান প্রধান অনেক দেশ ইজরায়েল দিকে থাকে। তখন ইজরায়েল যে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হবে না। তা বলা এক প্রকার নিশ্চিত।
কিন্তু কিছু উপায়ে ইজরায়েল কে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। এই বিষয়ে কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, ফুটবল পৃথিবীর প্রত্যেক মুসলিম দেশে জনপ্রিয়। আর বর্তমানে পৃথিবীতে মুসলমানদের সংখ্যা ২০০ কোটির অধিক। তাই যদি কোনো উপায়ে, এই মুসলিম ফ্যানবেজ ফিফার ওপর চাপ বাড়াতে পারে।

তাহলে ভক্তদের চাপে পড়ে ইজরায়েল কে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হবেন ফিফা। কারন এত পরিমাণে ফ্যানবেজ যদি ফুটবল বয়কট করা শুরু করে তাহলে ফিফার অনেক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হবে। তাই চাপে পড়ে ইজরায়েল কে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা ছাড়া, তাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।
৫৮ টি আইনজীবীর লিগাল নোটিশের পরেও। ইজরাইলকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে ফিফার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। এমনকি এই বিষয়ে ফিফা অনেক হালকা ভাবে নিচ্ছে। ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে ফিফা
এখন প্রশ্ন হলো মুসলমানেরা কি আজীবন এভাবে, অবহেলার স্বীকার হবে নাকি মুসলিমেরা প্রতিবাদ করা শুরু করবে। কারণ বর্তমানে বেশির ভাগ মুসলমানই এবিষয়ে কিছু জানেনা। জানলেও কিছু বলেনা।
উদাহরণ স্বরুপ বাংলাদেশের কিছু ইসলামী স্কলারেরা বলছেন, বাংলাদেশেে আর্জেন্টিনার ফুটবল ভক্তের অভাব নেই। তারা খেয়ে না খেয়ে, রাত জেগে, বাড়ির ছাদে অনেকে টাকা নষ্ট করে আর্জেন্টিনার পতাকা ঝুলাই। কিন্তু তারা কি জানে এই আর্জেনটিনা প্রকাশ্যে মুসলমানদের বিপক্ষে দাড়িয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন শুধুমাত্র ১০ টি দেশ ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন । তার মধ্যে অন্যতম আর্জেন্টিনা ,যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। বাকি সাতটি দেশ কম শক্তিধর যারা আমেরিকার ইশারায় চলে। শুধুমাত্র আর্জেন্টিনা এদের মধ্যে, এমন একটি দেশ, যারা ইচ্ছে করলে মানবতার পক্ষ নিতে পারতো কিন্তু তারা ইজরায়েলের পক্ষ নিয়েছে।
বাংলাদেশে ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে প্রায় অর্ধেকের বেশি জনগণ ফুটবলে আর্জেন্টিনার ভক্ত। তারা যদি একে একে আর্জেন্টিনার বয়কট করতে থাকে। সোসিয়াল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করতে থাকে। তাহলে এই বিষয় আর্জেন্টিনার সরকারের নিকট বা জনগণের নিকট পর্যন্ত পৌছাতে পারে।
শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়। পৃথিবীর প্রত্যেক মুসলিম দেশ যদি ইজরায়েল কে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত ফুটবল বয়কট করে। আর্জেন্টিনার বয়কট করে তাহলে চাপে পড়ে অবশ্যই ফিফার ইজরায়েল কে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমানে মুসলমানেরা উদাসীন, তারা মুসলমানদের দুশমোনদের অনুসরণ করে। এবিষয়ে তাদের বললে তারা বলবেন, ফুটবল আর্জেন্টিনা ও দেশ হিসেবে আর্জেন্টিনা আলাদা। ঠিক যেমন সাকিবের ভক্তরা বলেন, খেলোয়াড় সাকিব ও রাজনৈতিক সাকিব কে এক করবেন না। কিন্তু দিন শেষে সে কিন্তু একজন ব্যক্তিই বা একটি দেশই।
তাই আসুন মুসলমানদের পক্ষে থাকি। যেসব দেশ মুসলমানদের বিপক্ষে থাকে তাদের যথাসম্ভব বয়কট করি। তাহলে মুসলমানদের অধিকার ফিরে আসবে। তারা আমাদের খেলাধুলা দিয়ে ভুলিয়ে রেখেছে। যাতে আমরা এসব বিষয় উপলব্ধি করতে না পারি।