
মরোক্কোতে জেন-জি আন্দোলনের সর্বশেষ
মরোক্কোতে জেন-জি আন্দোলনের সর্বশেষ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শুধু জেন- জি বিপ্লবের থাবা। দেশের পর দেশ জেনজি দের হাত ধরে দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী মুক্ত হচ্ছে। তরুণের শরিরের গরম রক্তে ফুটে গলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে দুর্নীতি। হচ্ছে দেশের পর দেশে অপশক্তির পতন। এবার সেই জোয়ার ছোয়া লেগেছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোয়।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে মরক্কোর জেনজিরা। প্রথমে তো আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ভাবে চলতে থাকে। কিন্তু চরম ভুল করে বসে মরক্কোর পুলিশ। ঠিক শেখ হাসিনার পুলিশের মতন করে সরাসরি আন্দোলনকারীদের ওপরে, মরক্কোর পুলিশও গাড়ি চালিয়ে দিয়েছে।
ভারতে মুসলিমদের বয়কটের ডাক ও বোরকা বিতর্ক

নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর এমন দমন-পীড়নের ভিডিও প্রকাশিত হবার সাথে সাথেই সাধারণ জনতার মধ্যে রাগ ও ক্ষোভ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে, উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো মরোক্কো। এর পর থেকে এই আন্দোলন আর থামার নাম নিচ্ছে না। পুলিশ ও জেনজি বিক্ষোভকারীদের মধ্যে চরম পাল্টাপাল্টি আক্রমণ সংগঠিত হচ্ছে।
মরক্কোর, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ মরক্কোর একটি পুলিশ স্টেশনে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশ কালে পুলিশ গুলি চালায়। এমন অবস্থায় সাথে সাথে ৪ জন নিহিত হয়েছেন। আহত হয়েছে অনেকে। এমন অবস্থায় বিপ্লবকারীরা আরো শক্ত অবস্থান নিচ্ছে। কোনো মতেই তারা হার মানবে না।
এসময় উপস্থিত কিছু বিপ্লবকারীরা, গণমাধ্যম কে জানায়, এসবের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বে না। আলজেরিয়ার একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এপর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করেছে মরক্কোর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর এ তথ্য, বুধবার মরক্কার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছেন।

মরক্কোর পঞ্চম রাতে বিভিন্ন শহরে জেনজি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে চতুর্থ রাতে, আগের চেয়েও আগের দ্বিগুণগতিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। তারা জানিয়েছে যে বিক্ষোভকারীরা গাড়িতে আগুন দিয়েছে এবং দোকানপাট ভাঙচুর করেছে। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর ২৬৩ সদস্য এবং ২৩ জন বেসামরিক লোক আহত হয়েছে।
প্রথমে শ্রীলঙ্কা, পরে এক এক করে বাংলাদেশ, নেপাল, সিরায়া, ইন্দোনেশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে ছোট বড় জেনজি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। তার মধ্যে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, শিরিয়া এবং নেপালের রাষ্ট্র প্রধানদের পালাতে দেখা যায়। তাহলে কি সেই পথেই এগোচ্ছে মরক্কো।
বাংলাদেশে যেমন কোটা আন্দোলন দিয়ে শুরু হয়ে, শেষ হয় সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে। ঠিক অনুরূপ ভাবে মরক্কোও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়ে এখন বিশাল আকার ধারণ করেছে। মরোক্কোতে জেন-জি আন্দোলনের সর্বশেষ

ঠিক হাসিনা যেমন, বিপ্লব কারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়। হেলিকপ্টার থেকে, ছাদ থেকে রাস্তা থেকে বিভিন্ন ভাবে, গুলি করে বিপ্লবকারীদের দমাতে চেয়েছিল। ঠিক সেভাবেই মরক্কোর প্রশাসনও বিপ্লব কারীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে।
তারা আন্দোলন কারীদের ওপর সরাসরি পুলিশের গাড়ি চালিয়ে দিচ্ছে। প্রিয় দর্শক এই ভিডিও টি যদি আপনি দেখতে চান তাহলে আমাদের Muslim Observer 24 X handle এ দেখতে পারেন। সেই ভিডিও টি ভাইরাল হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (UNHRC) মরক্কোর ঘটনাকে “গভীর উদ্বেগজনক” বলে উল্লেখ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশ ইতোমধ্যেই মরক্কো সরকারকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। এভাবে ধমনপিড়ন নীতি থেকে মরক্কোকে সরে আসতে অনুরোধ করেছেন তারা।
মরক্কোর সাধারণ জনগণের অভিযোগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক দুর্নীতি, আর তারা সজ্জ করতে পারছেনাম। তাদের দাবি দেশে শিক্ষার অবস্থা ক্রমাগত নিম্নদিকে ধাবিত হচ্ছে। শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। প্রাইভিট, বই ব্যবসা সহ নানা দুর্নীতির আতুর ঘরে পরিনত হয়েছে।

তারো আরো জানান, হসপিটাল গুলোতে চিকিৎসার নামে রোগিদের লুটপাট করা হচ্ছে। সরকারি হসপিটালে চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি ডক্টর সরকারি হসপিটালে রোগি না দেখে প্রাইভিট হসপিটালে দেখছেন। রোগি দেখার সাথে সাথে অনেক রিপোর্ট দিয়ে নিজেদের কমিসন ব্যবসা পরিচালনা করছে। নিম্নমানের ওষুধ দিয়ে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে।
এমন নানা রকম দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়ে হবে মরক্কো। এসব হয়রানি, দুর্নীতির অবসান ঘটাতে তারা মাঠে নেমেছে। এসব দুর্নীতি শেষ না করে তারা মাঠ ছাড়বেন না। কিন্তু তাদের দাবি সরকার আমাদের ন্যায্য কথা না শুনে, আমাদের ওপর দমনপিড়ন শুরু করেছে। যা স্পষ্ট প্রমাণ করে এর সাথে সরকারের লোক জড়িত।
আমেরিকার বিখ্যাত সাংবাদ মাধ্যম, নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, “The Moroccan Gen Z movement may become the largest youth-led uprising in North Africa since the Arab Spring.” অর্থাৎ আরব বসন্ত আন্দোলনের পর এটিই উত্তর আফ্রিকার সবচেয়ে বড় আন্দোলন। মরোক্কোতে জেন-জি আন্দোলনের সর্বশেষ
মরক্কোর পরিস্থিতি যেভাবে দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, তাতে অনেক বিশ্লেষক বলছেন – মরক্কোও হয়তো শ্রীলঙ্কা, নেপাল বা বাংলাদেশের পথে এগোচ্ছে। সরকার যদি আন্দোলনকারীদের দমন করার পরিবর্তে তাদের দাবি মেনে নিয়ে সংস্কার না করে, তবে এই তরুণদের বিপ্লব মরক্কোর ক্ষমতার আসন কাঁপিয়ে দিতে পারে।